Main Menu

Thursday, April 7, 2016

অতঃপর আমি তোমাকে ভালোবাসি

মাহিন ইউনিভার্সিটি তে পড়ছে। ইউনিভার্সিটিতে মাহিন এর দাপট আছে।মাহিন ছাত্র ভাল।আর কারো কোন প্রয়োজন হলে মাহিন এর কাছে আসে।
একদিন মাহিন ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিল।এমন সময় পিছন থেকে একটা মেয়ে ডাকদিল
-মাহিন ভাইয়া।
-জি বলুন(মেয়েটির দিলে তাকিয়ে)
-আমি নতুন ভর্তি হয়েছি। আমি আমার এসাইনমেন্ট নিয়ে সমস্যায় পরেছি।
-ও।
-শুনেছি আপনি অনেককে এসাইনমেন্ট তৈরি করতে সাহায্য করেন। আমি যেহেতু নতুন সেহেতু যদি আপনি আমাকে সাহায্য করতেন।
-আচ্ছা। বেপার না আমার সাথে কালকে যোগাযোগ করবেন।
-যদি আপনার মোবাইল নাম্বারটা দিতেন।
-ও। আচ্ছা ০১৭২৩৬৮****
-আমি দরকার হলে যে কোন সময় ফোন করবো কিন্তু।
-আচ্ছা।
.
মাহিন রাতে কম্পিউটার এ কিছু কাজ করছিল। এমন সময়ে একটা অচেনা নাম্বার থেকে ফোন এল। মাহিন ফোন ধরে বলল
-হ্যালো।
-হ্যালো মাহিন ভাইয়া বলছেন?
-হ্যা। আপনি কে?
-আমি রিয়া।
-কোন রিয়া?
-আজ ক্যাম্পাস থেকে নাম্বার নিলাম।
-ও আপনি সে।

বুয়েট ও একটি ব্রেকআপ

NM shanto

– সরি রেহান আমি পারছি না
– বাট হোয়াই সামিয়া
– দেখ আমার অনেক ড্রিম ছিল বাট
  ইয়ু
– কি আমি কি?
– বাট তোমার জন্য আমার সব ড্রিম
   ভেঙ্গে গেছে
– আমার কি দোষ বল সামিয়া
– রেহান তুমি বুয়েটে চান্স পাও নি । আমার অনেক ড্রিম ছিল বাবাকে বলব আমার বি এফ বুয়েটে পড়ে সামিয়ার কথা শুনে রেহান
মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইল ।
সামিয়া আক্ষেপের স্বরে বলতে থাকল,
– রেহান এখন আমি আমার বাবাকে কি বলব? টেল মি রেহান।
– বুয়েট কি সব কিছু?
– রেহান তুমি বুঝতে পারছ না । আমার বড় আপুর হাজব্যান্ড
আমেরিকা থেকে পি এইচ ডি নিয়ে এসেছে । মেঝ আপুর হাজব্যান্ড ঢাকা ইউনিভার্সিটির টিচার । আর ছোট আপুর বয় ফ্রেন্ড মেডিকেল ফাইনাল
ইয়ারে পড়ছে…
সামিয়ার কথা শুনে রেহান ঠাণ্ডা গলায় বলল,
– তো আমাকে তুমি কি করতে বল ।
যেহেতু আমি বুয়েটে চান্স পাই।নি । তুমি কি চাচ্ছ না রিলেশনটা কনটিনিউ করতে?
সামিয়া কান্না জড়ানো গলায়
বলল,
– রেহান তুমি আমাকে ভুল বুঝ না ।
আমি আমার আব্বুকে কি বলব? আমার আব্বুর মাথা খাট হয়ে যাবে । আব্বু তোমাকে মেনে নেবে না ।
– আমি বুয়েটে চান্স পাই নি দেখে তোমার আব্বু আমাকে মেনে নেবে না?
সামিয়া রেহানের প্রশ্নের কোন
উত্তর দিল না । অন্য দিকে তাকিয়ে রইল । সামিয়ার চোখ জলে টলমল করতে লাগল । রেহান ছোট একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,
– থাক সামিয়া । আমাদের রিলেশান টা এখানে থেকে যাক । আমি যেহেতু বুয়েটে চান্স পাই নি । সো আমিও চাই না তোমার বাবা আমার জন্য ছোট হোক । কারন তোমার বাবা তো আমার বাবার মতনই… ভালো থেকো ।
রেহান মাথা নিচু করে হাঁটতে শুরু
করল । পেছন থেকে সামিয়া ডেকে বলল,
– রেহান প্লীজ নিজের খেয়াল
রেখ ।
রেহান সামিয়ার কথার কোন
সাড়া দিল না । হাটতে থাকল ।
সামিয়া জোর গলায় বলল,
– রেহান আমার চেয়ে ব্যাটার
মেয়ে তুমি তোমার লাইফে পাবা । ডোন্ট গেট আপসেট রেহান । আই ইউল প্রে ফর ইয়ু…
রেহান কোন উত্তর দিল না । এক সময়
রেহান দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে গেল । এবং তার একটু পর রেহানের ফোন আসল সামিয়ার ফোনে,
– সরি সামিয়া
– সরি কেন?
– আমি তোমাকে মিথ্যা বলেছি
– মানে?
– আমি আসলে বুয়েটে চান্স
পেয়েছি । টপ টেনের ভেতর আমার
পজিশন আসছে… ছোট এই মিথ্যাটা বলার জন্য সরি । ভালো থেকো । আমার চেয়ে ব্যাটার ছেলেই
তুমি পাবা । আই ইউল প্রে ফর ইয়ু…
রেহান লাইন কেটে দিল ।
সামিয়া সাথে সাথে রেহানের
ফোনে কল দিল । কিন্তু রেহানের
নাম্বারটা বন্ধ পাওয়া গেল ।

ভালোবাসার নতুন চলা

NM shanto


মোবাইলের রিংটোনেই ঘুম ভাঙ্গলো আদিবার।
– হ্যালো..
– আদিবা আমি নিতা.. (কাঁপা কন্ঠে)
– তুই নিতা, সেটা তো আমি জানি.. তোর কন্ঠ এমন শুনা যাচ্ছে কেন? কোন সমস্যা..?
– আদিবা আমি মনে হয় রাশেদকে দেখলাম..
– রা.. শে..দ কে দেখলি মানে, কোথায় দেখলি? আর মনে হয় মানেটা কি? তুই কি রাশেদকে চিনিশ না…
– না মানে, রাশেদকে চিনার মত অবস্থা নাই.. মুখ ভর্তি দাড়ি, এলোমেলো চুল.. ময়লা জামা কাপড় পড়া, ছোট ছোট ছেলেরা, ওকে পাগল পাগল বলে ‪#‎তাঁড়া‬ করছিল..
– তুই ঠিক চিনেছিস..?
– না, তবে ফিফটি ফিফটি… তবে আমি ওর সামনে যেয়ে রাশেদ বলে ডাকলাম ও আমার দিকে তাকিয়ে আবার হাটা শুরু করলো… আমি ওর একটা পিক তুলেছি, তোকে আমি পিকটা সেন্ড করছি, দেখতো, ও রাশেদ কিনা..?
– দে..
– দিয়ে দিয়েছি দেখ..
– পিকটার দিকে তাকিয়ে আদিবা কাদঁতে লাগল..
– ওপাশ থেকে আদিবার কান্নার শব্দ শুনেই বুঝতে পারলো.. ওর অনুমান ফিফটি ফিফটি না, ওটা রাশেদ ই ছিল…
– তুই কখন দেখেছিস রাশেদকে..
– দেখেই তো তোকে সাথে সাথে ফোন দিলাম…
– তুই কোথায় আছিস এখন…
– ফার্মগেট, সেজান পয়েন্টের সামনে..
– রা..শে..দ কোথায়..?
– তোকে ফোন দেওয়ার পর চোখের আড়াল হয়ে গেল..
– সীট..
– তবে সংসদ ভবনের ঐ দিক গিয়েছে..
– তুই থাক আমি আসছি..
প্রায় ৪ টা বছর ধরে রাশেদকে খুজছি। কোথায়ও পাইনি, কোথায়ও না। কেউ ওর সন্ধান দিতে পারেনি। এমন কোন যায়গা নেই রাশেদকে খুজিনি।
আজো মনে পড়ে সেই দিনটার কথা। রাশেদ, আমি, নিতা আমরা খুব ভালো ফ্রেন্ড ছিলাম। ভার্সিটি লাইফে আমরা তিনজন ছাড়া আমাদের আর কোন ফ্রেন্ড ছিল না। ভার্সিটি লাইফের একদুম শেষের দিকে। হঠাৎ একদিন রাশেদ আমাকে propose করে বসে। সেইদিন আমি বাসা থেকে রাগ করে বেড়িয়ে ছিলাম। মন মানষিকতা ও ভালো ছিলনা। তাই আমিও over reacts করে campus ভর্তি মানুষের সামনে রাশেদকে থাপ্পর মেরে, আরো আজেবাজে কথা বলে, অপমান করা শুরু করলাম। মাথা নিচু করে রাশেদ কথা গুলো শুনে চলে গিয়েছিল। সেই চলে যাওয়াটাই ছিল রাশেদের শেষ যাওয়া আর আমার সাথেও রাশেদের শেষ দেখা। নিতাও সেদিন কেঁদে দিয়েছিল, বলেছিল এতটা reacts না করলেও পারতি। নিতা ও অভিমান করে সেদিন চলে গিয়েছিল। নিতার অভিমান ভাঙ্গাতে পারলেও রাশেদ কে আর খুজে পাইনি….।
তার কয়েক দিন পরই বুঝতে পারলাম খুব ভালবাসি আমি ওকে। সারা দিন-রাত শুধুই ভাবতাম কিভাবে রাশেদের কাছে ক্ষমা চাইবো। কিভাকে ওকে বলবো, আমিও যে ওকে অনেক ভালবাসি। প্রতিটা দিন ওর অপেক্ষায় থাকতাম হয়তো আজই রাশেদ আসবে। কিন্তু ও আর আসেনি। মনে মনে চিৎকার করে কাঁদতাম, আর বলতাম একটা ভুলের এত বড় শাস্তি হতে পারে না…. বিশ্বাস ছিল রাশেদকে একদিন না একদিন খুজে পাব..। আমি আমার ভুল স্বীকার করে জানতে চাইবো, কেন আমাকে এত বড় শ্বাস্তি দেওয়া হল…?
– নিতা গাড়ীতে উঠ।
– নিতা গাড়ীতে উঠে বলল সংসদ ভবনের দিকে যা। হয়তো ঐ দিকটাতেই রাশেদকে পাব। বেশি দুর হয়তো যেতে পারেনি।
– হ্যাঁ চল…
আদিবা, নিতা সংসদ ভবনের সামনে গাড়ীটা পার্ক করে নেমে পড়ল। পুরোটা যায়গা খুজে বেড়ালো। সেই চেনা মুখটাকে। কিন্তু কোথায়..? সেই মুখের বিন্দুমাত্র অস্তিত্ব নেই এখানে..।
অনেকটা সময় খুজে, না পেয়ে ওদের ভিতরে একটা জিনিস কাজ করতে লাগলো, হয়তো রাশেদকে আর খুজে পাবে না।
– আদিবা চল ছবিটা নিয়ে পুলিশকে একটা ইনর্ফম করি।
– পুলিশ, পুলিশ কি খুজে বের করতে পারবে..? বলেই কাঁদতে লাগলো.. পেয়ে ও পেলাম না রে..
– কাঁদছিস কেন, তুই দেখিস রাশেদকে আমরা ঠিকই খুজে পাব, চল একটা কাজ করি চন্দ্রিমা উদ্দ্যানেও একটু খুজে দেখি..
– চল..
চন্দ্রিমা উদ্দ্যানের ভিতরে ঢুকতেই একটা গাছের নিচে রাশেদকে শুয়ে থাকা অবস্থায় চোখে পড়লো ওদের।
সেখান থেকে অনেক কষ্টে রাশেদ তুলে আনলো ওরা। রাশেদ শুধু আদিবার দিকে নির্বাক চোখে তাকিয়ে ছিল। আশে পাশের মানুষ গুলোও ওদের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিল।
অনেক দিন অনাহারে, অনিদ্রায় এবং নিজের জীবনের প্রতি মায়া হারিয়ে রাশেদ মানষিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে। ডাক্তার বলেছে ওকে একটু সেবা, ভালবাসা, আদর দিয়ে ওর ভিতর সুস্থ হওয়ার মানষিকতা তৈরি করতে হবে। হয়তো তাতে রাশেদ আবার আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে উঠবে…।
তারপর থেকেই আদিবা রাশেদকে সেবা, ভালবাসা দিয়ে আস্তে আস্তে সুস্থ করে চলছে….

Popular Posts