Main Menu

Saturday, May 11, 2019

নীল ডায়েরি থেকে > "লিস্ট" নংঃ ৩৬ [সাইকো থ্রিলার] গোলকধাঁধা লিখাঃএন এম শান্ত রক্তিম সূর্য উঠার সাথে সাথে আমি উঠে পড়লাম। চাদর এলোমেলো ভাবেই পড়ে রইল। ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে পড়লাম। আজ অনেক কাজ। কাজে দেরি করে গেলে বস আবার রাগ করতে পারেন। বাসে উঠে গন্তব্যস্থানে পৌছাতে বেশী সময় লাগল না। বাসা থেকে বেশী দূরে নয় আমার অফিস। অফিসের সামনে গিয়ে দেখি লোহা-লক্করে চারিদিক একাকার হয়ে আছে। তার মানে কেউ এখনও আসে নি। আমিই প্রথম। যাক বস আজ কিছু বলতে পারবে না। গতকালের নষ্ট গাড়ির দিকে গেলাম। এটাকে ঠিক করতে পারলে বেশ ভাল উপরি ইনকাম হবে। মনোযোগ দিয়ে গাড়ি ঠিক করতে আড়ম্ভ করলাম। খুটখাট শব্দ করে কাজ করছি। আশে-পাশে কেউ নাই। এক সকালে লোকজনের চলাচল নেই বললেই চলে যেন কোন কবরস্থানে আছি। কিছুক্ষণ পর একটি গাড়ি'র মৃদু শব্দ শুনতে পেলাম। ঘাড় ঘুড়িয়ে তাকাতেই দেখলাম একটা টয়াটো গাড়ি এসে হাজির। কেউ আসার আগে কোন গাড়ি ঠিক করে দিতে পারলে টাকাটা নিজের হবে ভেবে খুব আনন্দ হচ্ছিল। আবার দুঃখিতও হতে পারি যদি এই অসময়ে কেউ এসে পড়ে। ভাবলাম ৫০০ টাকার কমে তো এটাকে ছাড়বই না। গাড়ির কাছে গিয়ে লম্বা করে সালাম দিলাম। কিন্তু অবাক করা বিষয় হচ্ছে কেউ সালামের উত্তর দিল না। একটু যেন অস্বস্থি লাগল। তাহলে কেউ কি নেই ভিতরে। ভয়ে গা শিরশির করে ‍উঠল। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে গাড়ি থেকে এক বৃদ্ধ নেমে আসল। মাঝারি আকৃতি, মাথা ভর্তি চুল বেশ আটসাট চেহাড়া। একটু অবাক না হয়ে পারলাম না তাকে দেখে ততটা সুখি মনে হল না। গেটআপে তো মনে হয় বেশ টাকা-পয়সার মালিক। সে একটু কেশে আমায় বলল, তুমি কি এই গ্যারেজের মালিক? জ্বি না, স্যার। আমাকে স্যার বলার দরকার নেই। বরং আমাকে তুমি বল। ইয়ে য়ে...মানে আপনাকে তুমি। লোকটি হেসে বলল, আরে সমস্যা কি আমিই তো তুমি। মানে.. জানতাম এটা জিজ্ঞাসা করবে কিন্তু আমার কাছে উত্তর নেই। এখন তাড়াতাড়ি গাড়িটাকে যেভাবে পাড় ঠিক করো আমি বসলাম। আমি গাড়ির সামনের অংশ খুলে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছি। কিন্তু কোন সমস্যা খুজে পেলাম না। তারপরও তার কাছ থেকে টাকা আদায় করার জন্য ভাব নিলাম গাড়ির কতবড় সমস্যাই না হয়েছে। প্রায় আধ ঘন্টা ধরে গাড়ি ঠিক করার অভিনয় করে ক্ষ্যান্ত দিলাম। স্যার, আপনার গাড়ি ঠিক হয়ে গেছে। এত তাড়াতাড়ি। আচ্ছা বল কতটাকা। আমি কিছুটা ইতস্ততা করে বললাম, ৫০০। সে আমার দিকে মৃদু হাসল তারপর পকেট থেকে ৫০০ টাকার কচকচা নোট বের করে দিল। আর যাওয়ার সময় বলে গেল, আমিই তুমি। ধীরে ধীরে তোমাকে সব জানানো হবে। বলে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে ধীরে ধীরে চালিয়ে চলে গেল। আমি বোকার মত দাড়িয়ে রইলাম। তার কথার আগামাথা কিছুই বুঝলাম না। ধীরে ধীরে সবাই চলে এল। কোলাহলে ভরে গেল আমাদের কর্মস্থল। সেদিন বস আর কিছু বলে নি। আমিও খুশি ছিলাম। অতিরিক্ত ৫০০ টাকা পেয়ে। রাতে ভাবনাকে খবর দিয়ে বললাম আজ তোকে ঘুরতে নিয়ে যাবো। ভাবনাও খুশি। সন্ধ্যার পরে ভাবনাকে রাস্তার মোড়ে দাড়িয়ে থাকতে বললাম। আমি সেখানে গিয়ে দেখি ও দাড়িয়ে আছে। বললাম, বেশি দেরি করে ফেললাম নাতো। আরে না। আমিও মাত্র আসলাম। একটা রিক্সা ডেকে উঠে পড়লাম। রিক্সাটা খানিক ছোটই মনে হল। এতদিন যত রিক্সায় উঠেছি এত চাপাচাপি হয় নাই। নাকি ভাবনা মুটিয়ে গেছে। যাই হোক আমার ভালই লাগল। রাস্তা খারাপ হওয়ায় একটু পর পর ঝাঁকুনিতে ওর সাথে আমার শরীর লেগে যাচ্ছিল। ও কি অস্বস্থি বোধ করছে কিনা কে জানে অন্ধকারে তো ভাল করে দেখা যাচ্ছে না। ওর একটি স্তনের সাথে আমার দেহের ঘর্ষনে আমি খানিক উত্তেজিতই হয়ে উঠেছি। ও কিছু বলছে না। আমি আমার এক হাত ওর ঘাড়ের উপর দিয়ে রাখলাম। এখন ওর শরীরের সাথে আমার শরীর লেপটে আছে। যেন কাদা দিয়ে বানানো দুটো শরীর জুড়ে দেওয়া হয়েছে। আমি ওর গালে আলতো করে এক চুমু দিলাম। ও বলল, সমস্যা কি? কিছু না। তুমিও চাইলে দিতে পারো। মনে মনে ভাবছি রাগ করে কিনা। কিন্তু না। সত্যি সত্যি ও আমার গলা ধরে ঠোটে এক দীর্ঘ চুম্বন বসিয়ে দিল। আমি একটু হতবম্ভ হয়ে গেলাম। ভাগ্যিস নির্জন রাস্তা। নির্জন রাস্তা পার হয়ে আমরা মেইন রাস্তায় চলে আসলাম। আলো নিভে যাওয়ায় হলের সামনে আমাদের রিক্সা দাড়িয়ে পড়ল। ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে হলের টিকিট সংগ্রহ করলাম। হলের মধ্যে ভাবনাকে বললাম, আমার বাসা আজ ফাঁকা। ও কিছু বলল না। শুধু হাসল। সেদিন রাতে আমরা দুইজনে হোটেলে খেয়ে-দেয়ে আমার বাসায় আসি। বাসায় ঢুকেই ওকে জাপটে ধরে বিছানায় শুয়ে পড়ি। তারপর কখন যে রাত শেষ হয়ে গেছে বলতে পারব না। ঘুম ভাঙ্গলে দেখি ভাবনা আমার বুকের উপর শুয়ে আছে নিশ্চিতে। আমি ও ডেকে তুললাম। ও কাপড়গুলো পড়তে পড়তে আমাকে বলল, তুমি ভাল একটা চাকড়ি করতে পারো না। এত বড় পাস দিয়ে কেউ মেকানিক্স হয়? আমি শুধুই হাসলাম। ও চলে গেল। আমিও ফ্রেশ হয়ে আমার কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। গতকাল এই সময়ে গিয়ে একজন কাস্টমার পেয়েছিলাম। সেই লোভে আজও ছুটলাম। আজও পৌছে দেখি কেউ নেই। কারো থাকার কথাও না। কয়েকটা পার্টস নিয়ে ঘাটাঘাটি করছি। তখন আবার গাড়ির মৃদু আওয়াজ কানে এল। গতকালের সেই গাড়িটা আবার এসেছে। আমি গাড়ির সামনে যেতেই বৃদ্ধ লোকটি নামল। আমি বললাম, আবার কি সমস্যা হয়েছে? সেই একই সমস্যা। বলে হাসল। ঠিক আছে আপনি বসুন, আমি দেখছি কি করা যায়? সে বসল। কিন্তু একটু অবাক হলাম তাকে দেখে, আজ তাকে একটু অন্য রকম লাগছে। গতকালের চেয়ে বয়স কম কম মনে হচ্ছে। দূর চোখের ভুলও হতে পারে। আবার গাড়ির দিকে মনোযোগ দিলাম। আধ ঘন্টা ধরে গাড়ি ঠিক করার অভিনয় করতে হল। স্যার, ঠিক হয়ে গেছে। তুমি আবার আমাকে স্যার বলছ। আমি তো তুমি। আপনার কথা বুঝতে পারলাম না। বুঝবে সময় হলে। এখন বলুন। কয়েকটা কাজ সম্পন্ন করে তারপর বলব। কি কাজ আমাকে বলুন। করে দিব, কিন্তু রহস্য করবেন না দয়া করে। রহস্যের কি আছে তুমিই বুঝতে পারছো না। আমি কি করতে পারি। সে আবার ৫০০ টাকার একটা নোট আমাকে দিয়ে গাড়ি নিয়ে চলে গেল। আমি আজও পথের দিকে বোকার মত তাকিয়ে রইলাম। আজ টাকা পেয়ে বেশী খুশি হতে পারলাম না। তার কথাগুলো আমার কানে আটকে আছে। আমিই তুমি। এর মানে কি? সে যদি আমি হই...দূর ছাই চুলায় যাক। এসব ভেবে আমার কাজ নেই। বাসায় ফিরতে ফিরতে বেশ রাত হল। খাওয়া দাওয়া করে বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম । উঠে দেখি ভোর হয়ে গেছদে । তাই দেরি না করে তারাতারি শার্ট টি পড়ে দৌড়াতে লাগ্লাম গ্যরেজের দদিকে এই ভেবে যদি আজ তাকে মিস করে ফেলি। এই নিয়ে কয়েকদিন হল সেই লোকটা আসছে আর আমার হাতে পাঁচশ টাকা দিয়ে চলে যাচ্ছে । বিনিময়ে শুধু একটি কথাই বলে যাচ্ছে “আমি মানে তুমি”। এইটা নিয়ে টেনশন লাগছে তবু ও টাকার লোভে কিছু মাথায় আনতে পারছিনা। আজ পৌছাতে একটু দেরি হল । কিন্ত লোকটি দেখি গাড়ি নিয়ে দাড়িয়ে আছে । কাছে যেতেই বলল কি হে ইয়াং ম্যন ঘুম থেকে দেরিতে উঠা ঠিক নয় জানো । লোকটার কথা শুনে ঘার বাকিয়ে তার দিকে তাকালাম , কিন্ত তাকে দেখে আশ্চর্য হলাম , আজ তাকে মনে হচ্ছে বিশ বছরের টগবগে তরুন । আমি কোন পাত্তা না দিয়ে আমার কাজ করতে লাগলাম । আর সেইম আধা ঘন্টা পর বললাম হয়ে গেছে। টাকার কথা বলার আগেই সে দেখি টাকা বের করে বসে আছে । যথারিতি সে গাড়ি নিয়ে চলে গেল । কিন্ত যাবার সময় বলে গেল “সময় হলে সব বুঝতে পারবে “ তার কথায় অবাক হচ্ছি প্রতিদিন । তবু ও ওসব ফালতু ব্যপার বলে উরিয়ে দিলাম। আজ ও ফিরতে রাত হল । বাসায় ফিরে রান্না করছি এমন সময় ভাবনা'র ফোন এল। হ্যা, জানু বল। আমি জানু না। ছোটবোন। ও তুমি, কেমন আছো? জ্বি, ভাল। আপনাকে একটা খবর দিতে ফোন দিলাম। দাও। আপুর আজ বিয়ে। আপনাকে কষ্ট পেতে নিষেধ করেছেন। আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম। এই দুইদিন আগেই ওর সাথে এক বিছানায় রাত কাটালাম আজ বিয়ে। কই তখন তো কিছু বলল না। আমি আর কথা বলতে পারলাম না। সব কিছু ভুলে গেলাম। কিন্তু ভাবনাকে ভুলতে পারছি না। বেশ কিছুদিন কেটে গেছে ভাবনার বিয়ের। কিন্তু এখনও ওকে ভুলতে পারি নি। জানি চাইলেও ভুলতে পারব না। এক বন্ধু বলেছিল গাজা খেলে নাকি সব কিছু ভুলে থাকতে পারব সে চেষ্টাও করেছি কিন্তু কাজ হয় নি। জানি কোন নেশাই আমাকে ভাবনা'র ভাবনা থেকে মুক্ত করতে পারবে না। আজ সকালে আবার গ্যারেজে এলাম। সেদিনের পর থেকে প্রায় দীর্ঘ একমাস এখানে আসি নি। বস সব কিছু জানেন তাই কিছু বলেন নি। সকালে উঠার অভ্যেস হয়ে গেছে তাই সকাল সকাল আসতে পেরেছি। একটা পরিচিত গাড়ির আওয়াজ কানে এল। বুঝলাম সেই বৃদ্ধ। গাড়ির দিকে ঘুরতেই দেখি যা ভেবেছি তাই। সামনে গেলাম। দীর্ঘ এক সালাম দিলাম। কিন্তু কেউ বের হয় না। একটু পর একজন যুবক বের হয়ে আসল। তাকে দেখে আমি কি বলব ভাষা খুজে পেলাম না। দেখি আমার সামনে আমি দাড়িয়ে আছি। যেন আয়নার সামনে। আমি আমতা আমতা করে বললাম, সেই-ই-ই বৃদ্ধ লোকটি? সে বিদঘুটে হাসি হেসে বলল, আমিই সে, আমিই তুমি। আমি বিশ্বাস করি না। আপনি কোন কিছু লুকাচ্ছেন। বলেন সেটা কি? লোকটি বলল, বলবার নয় তোমাকে দেখাবো সেটা কি? আমি চুপ করে থাকলাম। জানি না সে কি দেখাতে পারবে। চোখ বন্ধ কর সব কিছু দেখতে পাবে। আমি চোখ বন্ধ করলাম। মনে হয় এক সেকেন্ড হবে চেয়ে দেখি সে নেই। গাড়ি আছে কিন্তু লোকটি নেই। আমার মাথা ঘুরতে থাকে। সবকিছু ঝাঁপছা লাগছে। লোহা-লক্কড় স্তূপকে পাহাড়ের মত মনে হচ্ছে। চেয়ারে বসে পড়লাম সবকিছু পরিষ্কার করার চেষ্টা করছি। কিছুই বুঝে উঠার আগে লোকটি উধাও কেন হল? সে আমাকে দেখাতে চেয়েছিল। কিন্তু দেখালো না। আমারও মনে হল, হ্যা আমিই তো সে। তাকে কেন অযথা খুজছি। গাড়িতে উঠে স্টার্ট দিলাম। ধীরে ধীরে গাড়ি চালিয়ে বাসার দিকে চলে গেলাম। গাড়ি চালাতে চালাতে মনে হল আরে কোন দিকে যাচ্ছি আমার বাড়ি তো ধানমন্ডি। গাড়ি ঘুড়িয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। একটা ছয়-তলা বিল্ডিংয়ের গেটের ভিতর দিয়ে ঢুকে পড়লাম। গাড়িটা পার্কিং লটে পার্ক করে সিড়ি দিয়ে দুই-তলায় চলে আসলাম। এটাই আমার বাড়ি। সবগুলো ভাড়া দিয়ে আমি দুই-তলায় থাকি। কলিং বেলের সুইজ টিপতেই এক বৃদ্ধ লোক দরজা খুলে দিল। এই লোকটিকে আমি চিনি। তিনি আমার বাবা। গুড মর্নিং বাবা। বাবাও আমাকে গুড মর্নিং জানালো। তারপর বলল, নাস্তা খেয়ে নে। আমরা বেড়াতে যাবো। শুনে খুশি হলাম। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফ্রেশ হয়ে নাস্তা টেবিলে বসলাম। ভাবনা খাবার নিয়ে এল। ওকে বললাম, ভাবনা তুমি খেয়েছো? সেই আগের মত লাজুক কন্ঠে বলল, হ্যা। আমি খেয়ে বেডরুমে ঢুকে নতুন প্যান্ট, শার্ট পড়তে পড়তে আয়না দেখছি। কিন্তু আয়নায় একি দেখছি। আমি চল্লিশ বছর বয়সীদের মত হয়ে গেছি। মাত্র বাসায় ফিরলাম ত্রিশ বছর বয়সী হয়ে ভাবতে পারছি না। কি হচ্ছে এইসব প্রথম থেকে সব কিছু আবার মনে পড়তে থাকল। কিন্তু কিছুতেই কিছু মিলাতে পারছি না। তাহলে কি কেউ আমার অতীত বর্তমান আর ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলছে? এটা কি স্বপ্ন নাকি হ্যালুসিনেশন ? #সাইকো

By kolpobazz

1 comment:

  1. How do you choose the best choose the best service among the ones listed here?
    SEO For Veterinarians

    ReplyDelete

Popular Posts