Main Menu

Saturday, January 5, 2019

আমার এক বন্ধু ছিল

আমার এক বন্ধু ছিল যার একটা মেয়ের সাথে
সম্পর্ক ছিল প্রায় ৪ বছর্। এই ৪ বছরের মধ্যে ৩
বছরই ওরা একে অন্যকে গালাগালি করেছে।
সমস্যাটা ছিল আসলে চাহিদায়।
.
মেয়ে ছিল ইয়ো টাইপ। বলিউড ফ্রিক। তার কাছে
ভালোবাসা মানে সবার সামনে হাটু গেড়ে ছেলে
তাকে প্রপোজ করবে। ভ্যালেন্টাইন্সে বলিউডি
প্রেমিকদের মত পার্টি থ্রো করে বন্ধুদের
সামনে প্রেমিকাকে দামী রিং পড়িয়ে দেবে
.
অন্যদিকে বন্ধু ছিল মিডল ক্লাস ফ্যামিলির্। সংগ্রামে
সংগ্রামে দিন পার করত। তার কাছে ভালোবাসা ছিল
কলকাতার মুভির মত। যতই অবহেলা করা হোক
মেয়ে সতি সাধ্যি স্ত্রীর মত বলে যাবে
- ও যে আমার স্বর্গ tongue emoticon
.
তো দুইজনের এই চাহিদার বৈপরীত্য শেষ পর্যন্ত
কলকাতা ভার্সেস বলিউডি মুভি হয়ে দুজনের মুখ
থেকে
- তুই শালা আবাল
- যা বেটি তুই শালী চামার
হিসেবে বের হত
.
এখনকার সম্পর্কগুলোতে ব্রেক আপের হার
বেশী হওয়ার মূল কারণ হল এইটা। যে এখনকার
ভালোবাসার সম্পর্কে ফিল্মি ভাব বেশী
জীবনের সাথে বাস্তবতার সাথে সম্পর্ক কম
.
আমার আব্বা আম্মার রিলেশান থাকাকালীন একটা ঘটনা
বলি। আম্মা তখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্সের
ছাত্রী। ফাইনাল ইয়ার পরীক্ষা। এমন সময় আম্মা খুব
অসুস্থ হলো। এদিকে সামনে পরীক্ষা নোটস
নাই কিছু। হল ছেড়ে আম্মা নানাকে বাড়িতে নিয়ে
এসেছে। হলে থাকলে বন্ধুরা হেল্প করতে
পারত। আব্বার তখন মাস্টার্স ফাইনাল দিয়ে ফ্রি টাইম।
.
আব্বা করল কি? আম্মার হোস্টেলে গিয়ে
বন্ধুদের থেকে সব নোটস নিয়ে নিল। তারপর
সেগুলোকে নিজের হাতে গুছিয়ে নিজে আলাদা
আলাদা বিষয়ের জন্য আলাদা আলাদা খাতায় লিখে একদম
গুছিয়ে আম্মাকে দিল।
.
শুনতে অবাক লাগছে তাই না? ভালোবাসার সাথে
পড়াশুনার সম্পর্ক এইটা আবার কেমন কথা।
.
.
জি হা এইটাই কথা। ভালোবাসারে তোমরা জীবন
বল। কিন্তু ভালোবাসার সাথে জীবনের কোন
সম্পর্ক রাখোনা। ভালোবাসা যদি জীবন হয় তাহলে
জীবনের পড়াশুনা ,ক্যারিয়ার ,পারিবারিক সমস্যা
সবকিছুতেই ভালোবাসার মানুষকে সাপোর্ট করাটাই
আসল ভালোবাসা
.
শুধু সপ্তাহে চারবার রমনায় যাইয়া দুইজন মিলে বাদাম
চিবালেই ভালোবাসা হয় না
.
দুইজন মিলে ডি এস এল আরওয়ালা বন্ধুরে ধইরা
ফেসবুকে কাপল পিক দিলে লাইক হয়তো বাড়বে
ভালোবাসার স্থায়িত্বের তাতে কোনই উপকার
হবেনা
.
ভালোবাসা টা কে বিয়েতে রুপান্তর করার জন্য যদি
বাস্তবতার উপর ভিত্তি করে লং টাইম প্ল্যানিং না করা যায়
তাহলে ভ্যালেন্টাইন্সই আজীবন পালন করবেন
৭০ এ গিয়ে নাতী নাতনি নিয়ে দুজনের ম্যারেজ
ডে আর পালন করা হবে না
.
ভালোবাসা মানে এইটা না যে সারাদিন ফোনে কথা
বলতে হবে ,আলোচনা সারাদিন তুমি আমি চুম্মা
চাটিতে আটকায় রাখতে হবে। ফেসবুকে চ্যাটিং
হবে কাপল পিকে লোক বাহ বাহ দিবে।
.
ভালোবাসা মানে এইটাও অনেক কথা বলতে ইচ্ছা
করার পরেও পরেরদিন পরীক্ষা শুনে বলা
- যাও পড়তে বস
বেকারত্বের হতাশা কাটাতে প্রিয়জন কে বলা
- আগামী সপ্তাহ থেকে দুইজন মিলে চাকরির
খোজে নামব। চাকরি না হয়ে যাবে কই
অসুস্থ হলে নিজে হাত লাগান
- মেসে থাকছ তো কি হইছে ডাক্তারের কাছে
আমি নিয়ে যাব
.
কারণ সত্যিটা হচ্ছে ক্যারিয়ার বিল্ড আপ যদি না করতে
পারে তাহলে যতই রমনায় বাদাম চিবান আপনার বাবা ঠিকই
শুনায় দিব
- নিজেরেই তো চালাতে পারোনা আমার
মেয়েরে কি চালাইবা
অনার্স না করতে পারলে আপনার মা আপনার
প্রেমিকাকে শুনায় দিব
- অশিক্ষিত মেয়ের কাছে বিয়ে দেয়ার প্রশ্নই
আসেনা
জি এটাই বাস্তবতা। কাপল পিক ,ডেটিং আর
ভ্যালেন্টাইন্সে ভালোবাসা দেখান হয় ভালোবাসার
কোন ঠিকানা পাওয়া যায়না। একদিন বলিউডি প্রেমের
চাহিদা আকাশ ছোয়া হয়ে যায়,অতপর সো কলড উলি
আমার জান্টু শালা তুইত চামারে পরিবর্তিত হয়
.
ভালোবাসা নিয়ে ইল্যুশনে কম ভোগেন। কিভাবে
সেই ভালোবাসাটাকে একটা ভিত্তি দেয়া যায় তার
জন্য প্ল্যান করেন। উলি আমার জান্টু বাদ দিয়ে
মাঝে মাঝে একে অন্যের ক্যারিয়ার বিল্ড আপে
হাত বাড়িয়ে দেন।
.
ভালোবাসা মানে বিনোদন না। এত সিরিয়াস একটা বিষয়
কোনদিন বিনোদিন হতে পারেনা। তিন ঘন্টার মুভি না
ভালোবাসা। আজকাল ভালবাসা বলতে আমরা
এন্টারটেইনমেন্টই বুঝি। বিনোদন মানেই যার
শেষ আছে। আজকাল তাই অতি কল্পবিলাসী
ভালোবাসাগুলা তিন ঘন্টার বিনোদন শেষে তুই শালা
চামারে গিয়ে শেষ হয়
.
ভালোবাসাটার সাথে বিনোদন ,শো অফের
সম্পর্ক কমিয়ে জীবনের সম্পর্ক টাকে বাড়ান
,নাহলে সেই সিনেম্যাটিক ভালোবাসা ফুচকা
দোকানে যাইয়াই পথ হারায় ফেলব ,ভালো বাসা
পর্যন্ত কোনদিন যাইতে পারব না।

No comments:

Post a Comment

Popular Posts